বরিশাল মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত।
বরিশাল জেলা সদর থেকে মাত্র ১/২ কিলোমিটার দক্ষিনে অবস্থিত.
ইতিহাস আর ঐতিহ্য মিশে আছে বরিশাল নগরীর বেলস্ পার্ককে ঘিরে। এই উদ্যানটি যেমন ব্রিটিশ উদ্যোগের স্মারক। তেমনি এর সঙ্গে মিশে আছে আমাদের জাতীয় জীবনের নানা ঘটনা প্রবাহের ধারাবাহিক অনুষঙ্গ।
জানা যায়, ১৮৯৬ সালে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এনডি বিটসেন বেল বরিশালে আসেন। ব্রিটিশ এই কর্মকর্তা নানা কারণেই বরিশালে স্মরণীয় হয়ে আছেন। বিটসেন বেল ও খান বাহাদুর হেমায়েত উদ্দিনের প্রচেষ্টায় বরিশালের মুসলিম ছাত্রদের শিক্ষার জন্য বেল ইসলামিয়া হোস্টেল নামে একটি ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হয়। বেল সাহেবের আরও অনেক অবদান রয়েছে। বরিশালে প্লেগের প্রাদুর্ভাব হলে তিনি এর নির্মূলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এই উদ্যান নির্মাণে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিটসেন বেলের অনন্য প্রচেষ্টার নিদর্শনস্বরূপ। জনশ্রুতি রয়েছে, রাজা পঞ্চম জর্জের বরিশাল শুভাগমনকে স্মরণীয় করতে এই মাঠটি গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন বেল সাহেব। কিন্তু কোন এক কারণে সে সময় এই কর্মসূচী বাতিল হয়ে যায়। তারপর থেকে সরকারী-বেসরকারী সকল বৃহৎ কর্মকা- এই মাঠকে ঘিরেই সম্পন্ন হয়। এ মাঠটি গড়ে তুলতে বিটসেন বেল বেশ দূরদৃষ্টির পরিচয় দিয়েছেন। সে সময়ে কীর্তনখোলা নদী আরও এগিয়ে ছিল। কীর্তনখোলার তীর ঘেঁষে সবুজের এই গালিচা এক অনন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ রচনা করেছিল।
উদ্যানটি সব মিলিয়ে লম্বায় ৭৫০ ফুট। প্রস্থে এটি ৫৫০ ফুট। তবে এটি উদ্যান ও পাশের লেকসহ সম্পূর্ণ হিসাব। শুধু উদ্যানটি লম্বায় ৫৫০ ফুট ও পাশে ৪৫০ ফুট। উদ্যানটি ঘিরে রয়েছে ওয়াকওয়ে। রয়েছে অসংখ্য বাহারি বৃক্ষ। উদ্যানের পাশে বাহারি লেক এর সৌন্দর্যকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। রাতে সবুজ ঘাসের পরে নান্দনিক আলো উদ্যানের সৌন্দর্যকে শুধু বাড়ায়নি, তাকে অনন্য করে তুলেছে। উদ্যানের মাঝে সবুজ ঘাসের গালিচা ছাড়াও এর চারদিকে রয়েছে ফুলের বাগান ও ছায়াদানকারী বৃক্ষ। রয়েছে বসার বেঞ্চ ও ছাতি। উদ্যানের পাশে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে অতিসম্প্রতি নির্মাণ করা হয়েছে গ্রীন সিটি পার্ক। যা উদ্যানকে আরও নান্দনিক করেছে। গ্রীন সিটি পার্কের সামনের পরিত্যক্ত লেকটি রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে আরও দৃষ্টিনন্দন করার দাবি করেছেন নগরবাসী। বর্তমানে এই বৃহৎ উদ্যানের ওয়াকওয়েতে সকাল-সন্ধ্যায় হেঁটে ভ্রমণ করেন কয়েক হাজার মানুষ। সন্ধ্যায় আলোক উদ্ভাসিত এই উদ্যানটি এখন নগরবাসীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস